কক্সবাজার সংবাদাতা:কক্সবাজার বন বিভাগের আওতাধীন বমু বিলছড়িতে বন্যহাতির আক্রমণে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির শিকার হয়েছে । জানা গেছে চট্টগ্রাম বিভাগের দুটি জেলার সিমান্ত উপজেলার সতঘর ভাংচুর সহ বাগান ,ফসলি ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির।শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।দুই উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় পাহাড়ি বন্যহাতির দল হানায় প্রতি বছর লন্ডভন্ড করে সীমান্ত গ্ৰামের ঘরবাড়ি সহ বাগান ও ফসলি জমির ফসল ।
সরজমিনে প্রতিবেদন সংগ্রহ কালিন দৈনিক প্রত্যয় কে সীমান্ত গ্ৰামবাসি জানান যে দিনে – রাতে থেমে থেমে তান্ডব চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছে তাদের ঘরবাড়ি সহ ফসলের মাঠের মূল্যবান ফসল ও বাগান। চকরিয়া উপজেলার সীমান্ত ও লামা বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের বরকুল ( ৬ নংওয়ার্ড ) এলাকার পূর্বাংশের ফকিরঝিরি এলাকার ৩ টি বসতঘর । ১৫ আগষ্ট শনিবার দিবাগত রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত( ১৬ আগষ্ট রবিবার) ১৫-২০টি বন্যহাতি ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে সীমান্ত এলাকার বসতঘর তছনছ করে দেয় ।
শুধু তা – ই নয় , এ সময় হাতিগুলাে মাড়িয়ে দিয়েছে ওই এলাকার পানিস্যাবিল , বসুরকুলের ৮ জন কৃষকের কলাবাগান ও ধান ক্ষেত । ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারগুলাের কেউ খােলা আকাশের নিচে , আবার কেউ কেউ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন । ১৬ আগষ্ট বিকালে এ রিপাের্ট লেখা পর্যন্ত হাতিগুলাে পুকুরিয়া খােলাস্থ হাতি মারা ঝিরি নামক জঙ্গলে অবস্থান করায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে । এলাকাবাসী জানায় গহিন পাহাড় থেকে বন্যহাতির দল শনিবার বিকালে বমু বিলছড়ির ইউনিয়নের বন বিভাগে রির্জাভ এলাকার বসুরকুলের পূর্বাংশের ফকিরঝিরির চৌকিদারের ঘােনায় নেমে পড়ে । সেখানে কলাবাগানের অবস্থান করে ক্ষয়ক্ষতি করে প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দা মােঃ শাহ আলমের বসতঘর ভাঙচুর করে ।
এরপর ঐ দিন রাতভর তান্ডব চালিয়ে একে একে একই গ্রামের বাসিন্দা মাে . ইউনুচ ও ইয়াছমিনের বসতঘর তছনছ করে ধান খেয়ে ফেলে । এরপর হাতিগুলাে ৮ জন কৃষকের ধানক্ষেত ও বাগানের কলা গাছ খেয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে । হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত মােঃ শাহ আলম , ইয়াছমিন আক্তার ও ইউনুচ জানান , শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে ১০-১২টি বন্যহাতি পাহাড়ের পূর্ব পাশ দিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে । এলাকায় হাতির আক্রমণ শুরু হলে লােকজন আতঙ্কে ছােটাছুটি শুরু করেন ।১৫ আগষ্ট দিবাগত রাতে গ্রামের মানুষ এক ঘণ্টার জন্যও ঘুমাতে পারেনি । হাতি কখন কার বাড়িতে ঢুকে পড়ে , এই ভয়ে মানুষ না ঘুমিয়ে রাত কাটিয়েছে । তারা আরও জানান , হাতিগুলাে প্রথমে বাড়ির চারিদিকে ঘেরাও করে ফেলে । বিশেষ করে ঘরের দরজা জানালার পাশে পাহারাদারের মতাে দাঁড়িয়ে থাকে । আর ঘর ভাঙা শুরু করে । পরে ঘরে থাকা ধান- চাল খেয়ে ফেলে । রাত জেগে আগুনের কুন্ডলি জ্বালিয়ে বাড়িঘর পাহারা দিয়ে হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েও রক্ষা পাওয়া যায়নি । এ বিষয়ে স্থানীয় বিট কর্মকর্তা মােঃ আহছান উল্লাহ জানান , আমরা অনেক রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে , ঢােল পিটিয়ে ও চিৎকার করেও বন্যহাতির দলকে সরানাে যায় না । বেশি ভয় দেখালে আক্রমণের জন্য তেড়ে আসে । স্থানীয় বমু বিলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব বলেন , হাতিগুলাে এখনাে এলাকায় অবস্থান করায় লােকজন আতঙ্কে রয়েছেন ।
পুনরায় যে কোনাে মুহূর্তে তান্ডব চালিয়ে জান ও মালের ক্ষতিসাধন করতে পারে । সেক্ষেত্রে লামা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মােঃ নুরে আলম হাফিজ বলেন , পাহাড়ে খাদ্য সংকট ও আবাসস্থল খুঁজে না পেয়ে লােকালয়ের দিকে ছুটে এসেছে বন্যহাতিগুলাে । হাতিগুলােকে গভীর বনে সরিয়ে নিতে স্থানীয়দের সহযােগিতায় কাজ করা হবে । বন্যহাতির কারণে ক্ষয়ক্ষতি হলে বন বিভাগের পক্ষে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । বলে তিনি জানান ।